বৈষ্ণব সাহিত্য

বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগের ইতিহাসে যে গতানুগতিকতার ধুলিধূসর পথ ছেড়ে প্রেম, সৌন্দর্য, ও আধ্যাত্মলোকের আলোক তীর্থে যাত্রা করেছে তার প্রধান কারণ বৈষ্ণব সাহিত্য। মধ্যযুগের যে নবজাগরণ হয়েছিল, তাকে কেউ কেউ “চৈতন্য রেনেসাঁস” বলে থাকেন। তা কিছু অতিশয়োক্তি নয় ৷

শ্রীচৈতন্যদেব : বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক। শ্রী চৈতন্যদেবের জন্ম ১৪৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি (২৩ ফাল্গুন) নবদ্বীপ এবং দেহত্যাগ ১৫৩৩ খ্রিঃ পুরীতে। তাঁর বাবা জগন্নাথ মিশ্র সিলেট জেলার ঢাকা দক্ষিণ গ্রামের অধিবাসী ছিলেন।

প্রকৃত নাম- বিশ্বম্ভর, বাল্য নাম- নিমাই, অন্যনাম- গৌরাঙ্গ ।

সন্ন্যাস গ্রহণের পর নাম হয় চৈতন্য। 

→ তাঁর প্রথম স্ত্রী লক্ষীদেবী (সর্প দংশনে মারা যান), দ্বিতীয় স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়া । 

→ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ- চৈতন্যদেবকে মুসলিম যুগে উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ এবং বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ বলেছেন । মাত্র ৪৮ বছর জীবিত থেকে (শেষ বারো বছর তাঁর বাহ্যিক চেতনাই ছিল না) চৈতন্যদেব বিশেষ ধর্মসম্প্রদায়, সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির ওপর যে প্রভাব বিস্তার করে গেছেন, ইতিহাসে তাঁর সমকক্ষ কোন তুলনা খুঁজে পাওয়া যায় না।

* ‘বৃন্দাবনের ষড়গোস্বামী’ নামে পরিচিত চৈতন্যদেবের ছয় জন প্রখ্যাত শিষ্য বৃন্দাবনে অবস্থান করে, বৈষ্ণবধর্ম প্রচারে ভূমিকা রাখেন- সনাতন গোস্বামী, রুপ গোস্বামী, জীব গোস্বামী, রঘুনাথ ভট্ট, রঘুনাথ দাস, গোপাল ভট্ট ।

* প্রথম তিনজন বৈষ্ণব শাস্ত্র রচনা করেন এবং শেষ তিনজন বৃন্দাবনে বৈষ্ণব সমাজের প্রতিষ্ঠা করে সারা বাংলাদেশে বৈষ্ণবশাস্ত্র প্রচারের ব্যবস্থা করেন ।

* শ্রীচৈতন্যদেব নিজে কোন পদ রচনা না করেও বাংলা সাহিত্যের মধ্য যুগে তাঁর নামে একটি যুগের সৃষ্টি হয়েছে।

ডাঃ সুনীতিকুমার ও গোপাল হালদারের মতে, চৈতন্য যুগ ১৫০০ – ১৭০০।

ডাঃ অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে চৈতন্যযুগ ষোড়শ শতাব্দী ।

* চৈতন্য পরবর্তী যুগকে সুবর্ণযুগ বলা হয় ।

বৈষ্ণব সাহিত্য তিন ভাগে বিভক্ত – ১. বৈষ্ণব পদাবলি ২. জীবনী সাহিত্য ৩. বৈষ্ণব শাস্ত্র

বৈষ্ণব পদাবলি

→ মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের যদি এমন একটি শাখা থাকে যা চিরন্তনত্বের মর্যাদা দাবী করতে পারে, বাংলার বাইরে এমনকি ভারতের বাইরেও তার বিষয়ে ভিন্ন গোত্রের পাঠকের মনে বিস্ময় সঞ্চারিত হয়ে থাকে তবে তা হল বাংলার বৈষ্ণব পদাবলি ।

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন বৈষ্ণব পদাবলি। পদাবলি সাহিত্য বৈষ্ণবতত্ত্বের রসভাষ্য । বৈষ্ণবদের উপাস্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ

→ বৈষ্ণব পদাবলি বৈষ্ণব সমাজে মহাজন পদাবলি এবং পদকর্তাগণ মহাজন নামে পরিচিত ।

বৈষ্ণব পদাবলিতে রস ৫ টি- শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য, মধুর বা আদি রস। মূলত আদি রস আস্বাদনের মাধ্যমেই বৈষ্ণব সাধনা চলে ।

রস ৯ প্রকার- শৃঙ্গার, বীর, রৌদ্র, বীভৎস, হাস্য, অদ্ভুত, করুণ, ভয়ানক, শান্ত । 

→ ড. দীনেশ চন্দ্র সেন- ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থে ১৬৪ জন বৈষ্ণব পদকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন ।

→ বৈষ্ণব সাহিত্যের চতুষ্টয় -বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস ।

পদাবলির শ্রেষ্ঠ কবি- চণ্ডীদাস

পদ বা পদাবলি বলতে বুঝায়— বৌদ্ধ বা বৈষ্ণবীয় ধর্মের গূঢ় বিষয়ের বিশেষ সৃষ্টি ।

বৈষ্ণব পদাবলিতে আট প্রকারের অভিসারের পরিচয় পাওয়া যায়- বর্ষাভিসার, জোৎস্নাভিসার, দিবাভিসার, তীর্থযাত্রাভিসার, সঞ্চরাভিসার, তামসীঅভিসার, কুজ্ঝটিকাভিসার, উন্মত্তাভিসার ।

বৈষ্ণব পদাবলির উল্লেখযোগ্য কবি :

জয়দেব : বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি, তিনি লক্ষণ সেনের সভাকবি ছিলেন। জয়দেব বাঙালি কবি ছিলেন।

কাব্য- ‘গীতিগোবিন্দম’ ১২ সর্গ, চরিত্র-সখী, রাধা, কৃষ্ণ (৩টি)। . সংগীত- শ্লোক অর্থে পদাবলি কথাটি তিনি প্রথম ব্যবহার করেন।

বিদ্যাপতি :তিনি মিথিলার রাজা শিবসিংহের সভাকবি ছিলেন। তিনি বাঙালি কবি নন।

উপাধি- মৈথিল কোকিল, অভিনব জয়দেব, নবকবি শেখর, কবিরঞ্জন, কবিক পণ্ডিত ঠাকুর, সদুপাধ্যায়, রাজ পণ্ডিত।

→ বিমান বিহারীর মতে, ১৪৬০ খ্রিঃ তিনি জীবিত ছিলেন। শহীদুল্লাহর মতে 

→ শহীদুল্লাহর মতে, জীবনকাল ১৩৯০ – ১৩৮০ ১৪৯০। 

→ তিনি পদাবলি রচনা করলেও কৃষ্ণভক্ত বৈষ্ণব ছিলেন না, ছিলেন শৈব

চৈতন্যপূর্ববর্তী কবি ছিলেনবিদ্যাপতি মৈথিলি, অবহটঠ, সংস্কৃত ও ব্রজবুলি ভাষায় রচনা করেন।

বিদ্যাপতির কাব্যকে রবীন্দ্রনাথ— রাজকণ্ঠের মণিমালা বলেছেন ।

ব্রজবুলি – ব্রজবুলি হল বাংলা এবং মৈথিলি ভাষার মিশ্রণে এক কৃত্রিম সাহিত্যিক কবিভাষা ।

[Note : বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি প্রিলি পরীক্ষার ক্ষেত্রে অপশনে জয়দেব না থা বিদ্যাপতি উত্তর হবে ।]

বিদ্যাপতির গ্রন্থ :

(i) কীর্তিলতা – অপভ্রংশ অবহটঠ ভাষায় লেখা ঐতিহাসিক কাব্য ।

(ii) কীর্তিপতাকা – ইতিহাস গ্রন্থ (অবহট্ঠ)

(iii) পুরুষ পরীক্ষা – মণীষা ও শিল্পকৃতির সমন্বয়রূপ কথা সাহিত্য (সংস্কৃত) 

(iv) গোরক্ষ বিজয় (নাটক) ।***

(v) বিভাগসার— পাণ্ডিত্য বিচার সম্বলিত স্মৃতিগ্রন্থ । (vi) দানবাক্যবলী ।

(vii) লিখনাবলী- অলঙ্কার শাস্ত্র বিষয়ক ।

তিনি বাংলায় পদ রচনা না করে ও বাঙালি বৈষ্ণবের গুরুস্থানীয় ।

→ তাঁর পদ প্রায় ১০০০, রাধা কৃষ্ণের উল্লেখ আছে এমন পদ প্রায় ৫০০টি।

বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন- “বিদ্যাপতির কবিতা স্বর্ণহার, বিদ্যাপতির গান মুরজবীণাস স্ত্রীকণ্ঠগীত ।

বিদ্যাপতির পদ :

(১) এ ভরা বাদর মাহ ভাদর শূন্য মন্দির মোর ।

(২) এতদিন ছলপিয়া তোহ হম যেহে হিয়া শীতল শীল কলাপে।

(৩)নব বৃন্দাবন নব নব তরুগণ নব নব বিকশিত ফুল

(৪) কি কহব রে সখি আনন্দ ওর ,চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।

(৫) আজু রজনী হম ভাগে গমাওল পেখল পিয়া সুখ চন্দা । 

(৬) নব অনুরাগিনী রাধা । কছু নাহি মানএ বাধা ॥

চণ্ডীদাস

বাংলা ভাষায় বৈষ্ণব পদাবলির আদি কবি এবং পদাবলির শ্রেষ্ঠ কবি। চণ্ডীদাস বৈষ্ণব পদাবলির দুঃখের কবি, সত্যের কবি, বিরহের শ্রেষ্ঠ কবি। বঙ্কিমচন্দ্র চণ্ডীদাসের কবিতাকে- রুদ্রাক্ষমালা বলেছেন । তিনি পূর্বরাগের শ্রেষ্ঠ কবি । চণ্ডীদাস জগৎ বলতে প্রেমকে বুঝিয়েছেন । মধ্যযুগের খাঁটি অকৃত্রিম বাঙালি কবি চণ্ডীদাসতাঁকে বাংলা কবি ভাষার আবিষ্কর্তা বলা হয় ।

→ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন— “চন্ডীদাস একচ্ছত্র লেখেন ও দশছত্র পাঠকদের দ্বারা লিখিয়ে নেন ।” 

চন্ডীদাসের পদ :

(১) ঘরের বাহিরে দণ্ডে শতবার তিলে তিলে আইসে যায়॥ 

(২) সদাই ধেয়ানে চাহে মেঘ পানে? ন চপল নয়ান তারা॥

(৩) সই, কেবা শুনাইল শ্যাম নাম । কানের ভিতরে দিয়া মরমে পশিল গো আকুল করিল মোর প্রাণ॥ (৪) যথাতথা যাই আমি যত দূর পাই ,চাঁদ মুখের মধুর হাসে তিলেকে জুড়াই ॥

(৫) ঘর কৈনু বাহির, বাহির কৈনু ঘর পর কৈনু আপন, আপন কৈনু পর৷

(৬) এমন পিরীতি কভু দেখি নাই শুনি পরাণে পরাণ বান্ধা আপনা আপনি৷

(৭) এ ঘোর রজনী মেঘের ঘটা কেমনে আইল বাটে। আঙ্গিনার মাঝে বঁধুয়া ভিজিছে দেখিয়া পরাণ ফাটে॥

(৮) সই, কেমনে ধরিব হিয়া আমার বঁধুয়া আন বাড়ী যায় আমার আঙিনা দিয়া॥

(৯) সই কে বলে পিরীতি ভাল, হাসিতে হাসিতে পিরীতি করিয়া কান্দিতে জনম গেল৷

(১০) এ ধন যৌবন বড়াই সকলি অসার ছিণ্ডিয়া ফেলাইব গজমুকুতার হার॥

(১১) বহুদিন পরে বঁধুয়া এলে, দেখা না হইত পরাণ গেলে ।

(১২)কি মোহিনী জান বঁধু কি মোহিনী জান ।অবলার প্রাণ নিতে নাহি তোমা হেন৷

জ্ঞানদাস :

ষোড়শ শতকের কবি। জন্ম আনু: ১৫৩০ খ্রিঃ বর্ধমান জেলায়। তিনি নিত্যানন্দের স্ত্রী জাহ্নবী দেবীর শিষ্য ছিলেন। তিনি ব্রজবুলি ও বাংলায় পদ লিখেছেন।

জ্ঞানদাস চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য ছিলেন, তাঁর কাব্যের নাম-মাথুরও মুরলী শিক্ষা 

→ তিনি রাধা কৃষ্ণের বয়সকে কিশোর, কিশোরী হিসেবে গুরুত্ব দেন।

জ্ঞানদাসের পদ :

(১) রূপ লাগি আঁখি ঝুরে গুণে মন ভোর প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর॥

(২) মনের মরম কথা তোমারে কহিয়ে এথা শুন শুন পরাণের সই।

(৩) মুরলী স্বরে রহিবে কি ঘরে গোকুল যুবতীগণে ।

(৪) আবেশে সখীর অঙ্গে অঙ্গ হেলাইয়া বৃন্দাবনে প্রবেশিল শ্যাম জয় দিয়া I

(৫)সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু আনলে পুড়িয়া গেল ।

(৬) রাধা-তুয়া অনুগামে হাম নিমগম হইলাম ।

কৃষ্ণ- তুয়া অনুগামে হাম গোলোক ছাড়িলাম৷

 গোবিন্দদাস :

তিনি ষোড়শ শতকের কবি । জন্ম আনুমানিক ১৫৩৫ খ্রি. মুর্শিদাবাদ জেলায় । পারিবারিক পদবী – সেন । তিনি শ্রীনিবাস আচার্যের শিষ্য ছিলেন ।

→ তিনি প্রায় ৭০০ পদ (ব্রজবুলি + বাংলা) লিখেছেন । 

শ্রীজীব গোস্বামী কবিকে -কবিরাজ ও কবীন্দ্র উপাধি দেন। গৌরচন্দ্রিকার শ্রেষ্ঠ পদকর্তা, অভিসারের শ্রেষ্ঠ পদকর্তা । ব্রজবুলি ভাষায় রচিত তাঁর কাব্য- ‘গীতগোবিন্দ’ । 

→ তিনি বিদ্যাপতির ভাবশিষ্য ছিলেন, তাঁকে দ্বিতীয় বিদ্যাপতি বলা হয় ।

তাঁর রচিত নাটক— সঙ্গীত সাধক। (সংস্কৃত)

 গোবিন্দদাসের পদ :

(১) নন্দ নন্দন, চন্দ চন্দন গন্ধ নিন্দিত অঙ্গ । 

(২) ঢল ঢল কাঁচা অঙ্গের লাবণি অবনী বহিয়া যায় । 

(৩) হাসিয়া হাসিয়া অঙ্গ দোলাইয়া নাচিয়া নাচিয়া যায় । 

(8) কপালে চন্দন ফোঁটার ছটা লাগিল হিয়ার মাঝে।

(৫)যাঁহা যাঁহা নিকসয়ে তনু তনু জ্যোতি তাঁহা তাঁহা বিজুরি চমকময় হোতি ।

(৬) মন্দির বাহির কঠিন কপাট । চলইতে শঙ্কিল পঙ্কিল বাট।

(৭) কণ্টক গাড়ি কমল সম পদতল মঞ্জীর চিরহি ঝাপি।

(৮) দুহু দোঁহা দরশনে উলসিত ভেল। অকূল অমিয়া সাগরে ডুবি গেলা

বৈষ্ণব পদাবলির অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কবিরা হলেন- শ্রীনিবাস নরোত্তম, শ্যামানন্দ, গোবিন্দ আচার্য, রায় শেখর, রায়বসন্ত, কবি বল্লভ, বল্লভ দাস, বিদ্যাবল্লভ।

বৈষ্ণব পদাবলির প্রথম সংকলন ‘পদ সমুদ্র’। এর সংকলক বাবা আউল মনোহর দাস। এতে প্রায় ১৫ হাজার পদ আছে ।

বৈষ্ণব পদাবলির মুসলমান কবিঃ

আদি কবি- শেখ কবির ।

অন্যান্য কবি-– আফজাল, শেখ ফয়জুল্লাহ, সৈয়দ আইনুদ্দিন, সৈয়দ মুর্তজা, আলাওল, আলি রজা, করম আলী, সৈয়দ সুলতান, নওয়াজিস।

চণ্ডীদাস সমস্যা:

মধ্যযুগের বাঙালির প্রাণ যে কাব্য- মার্গে আপনাকে উৎসারিত করে দিয়েছে তা হল বৈষ্ণব পদাবলি । সেই পদাবলির কবিদের মধ্যে নানা কারণেই বলা যেতে পারে চণ্ডীদাস শ্রেষ্ঠ চণ্ডীদাস কয়জন তা নিয়ে সমালোচকদের মধ্যে মতভেদ আছে ।

→ ডঃ দীনেশ চন্দ্র সেন ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থে একজন চণ্ডীদাসের কথা বলেছেন ।

→ ডঃ সুকুমার সেন, মনীন্দ্রমোহন বসু, শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে চণ্ডীদাস দুইজন ।

→ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চণ্ডীদাস ৩ জন

১. বড়ু চণ্ডীদাস ২. দ্বিজ চণ্ডীদাস ও ৩. দীন চণ্ডীদাস ।

→ ডঃ আহমদ শরীফের মতে চণ্ডীদাস ৩ জন ।

১. অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস ২. চণ্ডীদাস ৩. দীন চণ্ডীদাস।

উপর্যুক্ত মতামত অনুসারে বলা যায় চণ্ডীদাস চার জন

(i) অনন্ত বড়ু চণ্ডীদাস (ii) চণ্ডীদাস (iii) দ্বিজ চণ্ডীদাস (iv) দীন চণ্ডীদাস ড. অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সহজিয়া চণ্ডীদাস’ নামে অন্য একজন চণ্ডীদাসের নাম উল্লেখ , করেছেন। যাই হোক, চণ্ডীদাস সমস্যা মীমাংসা করার জন্য যথেষ্ট প্রামান্য তথ্যাদির এখনও অভাব আছে । আমরা যে যে যুক্তি দিয়ে ২ জন, ৩ জন বা ৪ জন চণ্ডীদাসকে উপস্থাপন করতে চাই। তার প্রতি যুক্তিও অকল্পনীয় তা নয়। আসল কথা উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে এ বিষয়ে নিঃসংশয় হয়ে কিছু বলা যায় না ।

[নির্দেশনাঃ শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন লেখেন বড়ু চণ্ডীদাস, 

পদাবলী লেখেন দ্বিজ চণ্ডীদাস, 

পালাগানের রচয়িতা দীন চণ্ডীদাস, 

সহজিয়া রাগাত্তিকা পদের রচয়িতা চণ্ডীদাস]

Write Reply...